মঙ্গলবার, ২৭ মে, ২০১৪

পথের শের

পথে যানজট ভীড়ে, চলছে সবাই ধীরে,
ব্যগ্র সবে নিজকে নিয়ে, ফিরবে আপন নীড়ে।

দাঁড়িয়ে থাকে ঠাঁয়, রোগীর গাড়ি হায়!
ইতর জটে মরলে মরুক, কার কী আসে যায়!

অসভ্যতার ফেউ, ছাড় দেবে না কেউ,
নিজের ফাঁদেই পড়ছে সবে, কাঁদিসনা ভেউ ভেউ।

ও চাবুক খাওয়া ভক্ত, বুঝতে পারা শক্ত?
সময় হল সভ্য হওয়ার, শুদ্ধ কর রক্ত।

==
সোয়া-সের for শোয়া-শের: ৪টি ভিন্ন অনুচ্ছেদ আলাদা আলাদা শের এর মত করে পড়া যেতে পারে।
সোয়া = শতকরা ২৫ ভাগ বেশি
শোয়া = শায়িত অবস্থা
সের = ওজনের পরিমাপ
শের = বাঘ, সিংহ; ফার্সি ও উর্দূ ভাষার দুই লাইনের কবিতা

বুধবার, ২১ মে, ২০১৪

হাবুডুবু কাজে

লোকটা ডুবে কাজের চাপে, 
ফুসফুসে তার নাই বাতাস, 
আফসোসেরও সময়টা নাই, 
বুক ভরে চায় একটু শ্বাস। 
       
অভাব জ্ঞানের সাঁতার কাটা, 
জীবনখানাই হয় মিছে, 
ভাবছে বাঁচার চেষ্টা নিয়ে, 
পালাবে এক দৌড়-খিঁচে। 
       
দৈবগুণে হয়তো হঠাৎ, 
ক্ষণিক ভাসা ঐ নীলে, 
আনন্দে নেয় বুকভরা শ্বাস, 
উড়ছে যেন গাঙচিলে। 
       
অন্ধকারে থাকছে বলেই, 
মূল্য বোঝা এই আলো, 
মুক্ত সময় কতই গেছে, 
ভাবছে বসে মুখ কালো। 
       
আকাশ বিলাস পেছন ফেলে,   
গ্রাস করে ফের সেই জলে, 
থাকলো পরে স্মৃতির চাবুক, 
সমূদ্র নীল সেই হুলে। 
       
       
       
       


==
ব্যাখ্যা: কাজের চাপে একটু ছড়াবাজি কিংবা একটু ফেসবুক/ফোরাম/ব্লগ/পেপার খুলে দেখারও সময় পাওয়া যাচ্ছে না। সাঁতার না জানার ফলে নৌকা আরোহী পণ্ডিতের যেমন পুরা জীবনাই মিছে হয়ে যায়, তেমনি কাজের সমুদ্রে সাঁতার না জানাটাও একই রকম প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে। হঠাৎ করেই হয়তো কাজ ভিলেনের চোখ ফাঁকি দিয়ে মুক্তির জানালায় একটু সময় কাটানো গেল। কর্মহীন অতীতে এরকম কতই ফ্রী সময় অবহেলায় কেটে গিয়েছে ভেবে আফসোস হয়; একটু ছুটি যে কত দামী সেটা এখন বুঝা যাচ্ছে। ছড়া/কবিতা লেখার এই ক্ষণিকের অবসরটুকু শেষ -- আবার সেই নীল বেদনাময় কাজের জঞ্জালে ডুবতে হবে। -- ছড়াবাজ।

সোমবার, ১৯ মে, ২০১৪

কথাবার্তা সাবধানে ... ...

"ছানাবড়া চোখ" শুনে পিচ্চিটা তাকালো,
বুঝে নাকি না বুঝে ও মাথাখানা ঝাঁকালো ...
মনে মনে শঙ্কায় ভাবলাম লে ঠেলা,
ভীমরুল জিজ্ঞাসা, থামবেনা এ বেলা।

বড়া কী? ছানা কী? চোখ হলো কানা কি?
কানা মানা জানা নাই? ছানা কি গো গাওয়া ঘি?
সুযোগের সন্ধানে, যেতে চাই সটকে,
গলা ছাড়্ বিটকেল! থাকিসনা লটকে।

আইসক্রিম গলা নাকি? যাবে গলে গরমে?
বিটকেলে ইট কই? খিল্ খিল্ চরমে।
চুপচাপ পড়ে থাকি, ঝিম মেরে মটকা,
রক্ষা কি আছে তায়, খো‌কা রাম ফটকা!

বানানে হয়রান

বর্ষার ধারাপাতে নামে নাকি বিষ্টি,
কুড়ি নাকি গরল তা, শুনে ভাবি মিষ্টি।
শুনেছি ও বিষখানা, জলে নাকি গলে না,
ভেজালের জয়কারে, খেলে কেউ টলে না।

==
ব্যাখ্যা:
বেশ কিছু জায়গায় বৃষ্টিকে আদর করে বিষ্টি লেখে দেখে মাঝে মাঝে সেটা কোন শব্দের টুইস্ট সেটা চিন্তা করে ধাক্কা খেতে হয়। কাছাকাছি আরও অনেক শব্দ আছে যাদেরকে অপভ্রংশে বিষ্টি বলা যেতে পারে। যেমন:  বিষ্ঠা (পয়ঃবর্জ্য), বিশ (twenty), বিষ (গরল, বিষাক্ত দ্রব্য), বিস্ট (beast, জানোয়ার - নিষ্ঠুরতা বা গোয়ার্তূমী অর্থেও)।

শনিবার, ১০ মে, ২০১৪

ছড়ানু - ০৪

১।
এই শহরে ইট-পাথরে,
বিরাট বন্দীশালা,
আকাশ-তারা, জোৎস্না চাঁদের,
নাইকো আলোকমালা।

২।
চুঁইয়ে পড়ে কষ্টগুলো,
আদর মাখা স্মৃতি,
গভীর ছোঁয়ায় মনকে ঝাঁকি,
হুতাশ বৃহস্পতি।

৩।
ছা গুলো আর থাকবে নাকো,
উড়বে পাখা মেলে,
শুনবে নাকো পিতার কথা,
আদর সোহাগ, কিলে!

৪।
সকাল বিকাল চারবেলাতে,
সব খাবারেই আলুর জয়,
কর্তা যদি হয় আলুবাজ,
গিন্নি মনে নিরেট ভয়।

৫।
অরুণ রাঙা, আজ উদাসীন,
দিচ্ছে নাতো সান্তনা,
"যেমন খুশি", শেষ হলো আজ,
আইবুড়োদা'র যন্ত্রণা।

==
শব্দার্থ:
হুতাশ [hutāśa] বি. হতাশা দুর্ভাবনা বা আতঙ্কের অভিব্যক্তি (হা হুতাশ করা)। [< সং. হতাশ]।
বৃহস্পতি [bṛhaspati] বি. 1 দেবগুরু; 2 মহাপণ্ডিত; 3 গ্রহবিশেষ; 4 সপ্তাহের বারবিশেষ। [সং. বৃহত্ + পতি]। একাদশ বৃহস্পতি 1 (জ্যোতিষ.) জাতকের রাশিচক্রের একাদশ কক্ষে বৃহস্পতি-গ্রহের অবস্হান; 2 (আল.) অত্যন্ত শুভ বা উন্নতির সময়। বুদ্ধিতে বৃহস্পতি অতি বুদ্ধিমান। বৃহস্পতিবারের বারবেলা বি. জ্যোতিষশাস্ত্রমতে বৃহস্পতিবারের যে সময়ে শুভকাজ নিষিদ্ধ।

বুধবার, ৭ মে, ২০১৪

ছড়ানু - ০৩

১।
সব বাঁধনই ছিড়লো যখন,
ছাড়লো যমের নাও,
পড়লো মনে তখন বুঝি,
ছোট্ট বেলার গাঁও।

২।
অনেক ঝড়ের পরে,
আসলে বোঝার সময়,
ছিঁড়লো মায়ার বাঁধন,
বিদায় নিলেন চুমোয়!

৩।
হাতটা খালি পকেট ফাঁকা,
দিচ্ছি যে তাই, গা-ঢাকা।
পাওনাদার ঐ ঘুরছে দেখ,
লুকিয়ে বসে কবতে লেখ।

৪।
কাঁদিস নারে অবুঝ পোলা,
পাসনে মোটেও কষ্ট,
কত রাণীই বাড়িয়ে দুহাত,
করতে জীবন নষ্ট।
(হাত বাড়িয়ে পড়বে ঝুলে,
বুঝবি কেমন চড়তে শুলে!)
  hehe

৫।
আশায় আশায় থাকলে বসে,
হচ্ছে নাতো কিছু,
দাঁড়াও খাড়া শিরদাঁড়াতে,
নয়তো ঝুঁকে নিচু।

৬।
ইচ্ছে করে দেই যে ঘুটে,
সমাজ নামক যন্ত্র,
শান্তি সুখে উঠুক ভরে,
ছুঃ মন্তর মন্ত্র!

মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০১৪

বোকা বকা

বাজ পড়েছে রাতের বেলা,
বললো যবে খোকা,
গেলেন রেগে মজনু মিয়া,
"রে বদমাশ বোকা"!

জানিস নে তুই শব্দে বাজের,
ঘুম হয় না মোর,
ডাকলি না ক্যান? জেনেও সেটা,
সাহস কত তোর!

গেলাম বেঁচে স্বস্তি ভেবে,
ফু দেয় নিজ বুকে,
এবার তবে একটু ঘুমাই,
দিনের বেলায় সুখে!