সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০১৩

খাদ্য বিষয়ক অক্ষমতা

পকেট যখন থাকতো ফাঁকা,
মনটা শুধু করতো খা খা,
রুচতো মুখে সব খাবারই,
হোক সে হোটেল কিংবা বাড়ি।

চাইলেও কি থাকতো উপায়,
খাইতে খাবার মন ভোলা,
মানিব্যাগের কয়টি টাকা,
বাস ভাড়াতে থাক তোলা।

চান্সটি পেলে হঠাৎ করে,
দাওয়াত কিংবা ফিস্ট হলে,
সাঁটিয়ে দিলাম উনিশ খানা,
পরটা আর চাপ গিলে।

কিংবা ঘরোয়ার খিচুড়ি,
একবারেতেই তিনটা ফুল,
চেটেপুটে সব খাওয়াতে,
পেটুক আমি হতাম কুল।

এমন করেই কাটলো সময়,
স্মৃতিময় সেই লোলঝরা,
বয়স ভারে, শরীর কাঁপে,
মানিব্যাগে নাই খরা।

পকেট এখন থাকছে ভরে,
চাইলে পারি তিন বেলা,
চাকুম চুকুম খাদ্য যত,
ভরতে পারে এই গলা।

হাসছে বুঝি ঐ বিধাতা,
পরিহাসটা অলক্ষ্যে,
কতই ব্যামো এই শরীরে,
ডায়েট করাই যে রক্ষে!

খাদ্য নিয়ে অক্ষমতা,
থেকেই গেলো সব কালে,
হইলো নাতো কোনোবারই,
টাইমিং যে ব্যাটে-বলে।

রবিবার, ৩১ মার্চ, ২০১৩

ইদানিং … … – ০২

এক রাতেতে বুড়িমারী,
          ফেরৎ আরেক রাতে,
নয়শ কিলোর বেশি ঘুরেও,
          হয়নি ব্যাথা দাঁতে।

অফিস বসে টুপছি এখন,
          পা ফুলে যে ঢোল,
কাজের চাপে চ্যাপ্টা চিড়ে,
          হচ্ছে মাথা ঘোল।

ভাবছি ছুটে কখন যাবো,
          গড়ান দেবো খাটটাতে,
টলছে মাথা, চোখের ব্যাথা,
          টনটনিয়ে ঘাড়টাতে।

ভাবছি বালিশ, একটু মালিশ,
          করতো যদি কেউ এসে,
নাক ডাকিয়ে, ঘুম যে দিতাম,
          ছড়ার নেশা যাক ভেসে।

==

ফাঁকিবাজি করতে পারলাম কৈ,
ডেকেছিলো মিটিং এক বদ ব্যাটা ঐ।

==

পাইতে সেবা কপাল লাগে,
আমার কপাল ঠকঠকা;
আদর সোহাগ মুখেই থাকে,
স্বার্থগুলো ফকফকা।

কী আর করা, মানতে হবে,
জীবন টাতো এইরকম;
মা-ভাই গুলো নাইতো কাছে,
কন্যা অবুঝ, দিল্ রহম।


===
প্রথম প্রকাশ: প্রজন্ম ফোরাম

শনিবার, ৩০ মার্চ, ২০১৩

স্মৃতিচারণ – ০৫

চোখ বুজে বসেছিনু, লম্বা যাত্রায়,
নাসিকার গর্জনে, ভিন্ন মাত্রায়;
কোত্থেকে হঠাৎ এক, অদ্ভুদ সুঘ্রান,
বরবাদ নিদ্রায়, অস্থির মন প্রাণ।

মনে হল আছে সে কি, স্পর্শের নিবিড়ে,
চোখ ভরে অশ্রুতে, অনুভব গভীর এ;
হাহাকার করে মন, আজ তুমি নাই হায়,
ভেসে যাই কত শত, স্মৃতির এক বন্যায়।

যদি দেখি চোখ ভরে, সবুজ এই প্রান্তর,
মনে পড় যে তুমি, বাঁধনের হে শেকড়;
কতবার চেয়েছিলে, ফিরতে যে এ বাড়ি,
হল না তো জীবনে, দিলে ওপারে পাড়ি।

অ্যাম্বুলেন্স যদি, দেখি কোনো রাস্তায়,
স্মৃতিগুলো অস্থির, মনে শুধু ধাক্কায়;
কি যে এক আক্ষেপ, পারিনি তো বাঁচাতে,
কার প্রিয় আজ হেথা, ছাড়ি পথ তড়িতে।

লেখাপড়া হোক আর, হোক সেটা প্রমোশন,
ছুটে গিয়ে বলি কারে, মিস করি যে ভীষন;
প্রেরণায় ছিলে মোর, চেপে নিজ কষ্ট,
কত কিছু বুঝি আজ, তুমি বাবা শ্রেষ্ঠ।


===
প্রথম প্রকাশ: প্রজন্ম ফোরাম

ইদানিং … …

আঁকে উদাসীনে এক, পল্লীর ও বালিকা,
কল্পনাতে রঙিন, সাদা কালো ছবিটা;
বাঁকগুলো নদী যেন, যৌবন উছলায়,
ষোড়শী নায়িকা সে, চোখ ফেরানো যে দায়।

কাঁখে কলস নিয়ে, জলকে যায় ঘাটেতে,
অপেক্ষায় উত্তাপ, শুয়ে হাসে খাটেতে;
কল্পনা চিরকাল, হয় বুঝি এরকম,
চিন্তায় শীতেও, গরম ঐ বেশরম! 

তরুণীরা চিন্তায়, কী ভাবে তা কে জানে,
কালা, বেঁটে, ভুড়িয়াল, কভু আসে কি মনে?
পেতে যদি চাও তব, এমন এক শ্রেয়শী,
মানিব্যাগ মোটা হলে, হতে পারে প্রেয়সী।


===
প্রথম প্রকাশ: প্রজন্ম ফোরাম

বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০১৩

ছড়ার মূল্যহ্রাস ঠেকাতে …

ছড়াগুলো মনে হয়, পাচ্ছে না বেশি দাম,
স্মরি তাই টেকনিক, ডায়মন্ড যে মহান
তাইতো ভাবছি, হবে চেপে ধরতে,
ডিমান্ড আর সাপ্লাই, মডিফাই করতে।

সাপ্লাই কমবে, দেড়দিনে একটা,
ডিমান্ডে ফলোয়ার, হীরকের ঝটকা।
স্টার সব লোকে লেখে, কত কত ছড়া রে,
ছড়িয়ে দেবো তা, ভাবে হামবড়া হে!

পাপারাজ্জি ভাড়াতে, নেবে কত স্ক্রিন শট,
প্রচারের ত্যানাতে, সবকিছু লাগে হট।
ছড়াবাজি ফরেভার, কত মান সম্মান,
স্পটলেস প্ল্যান এটা, কোলে ঝোল টেনে আন।


===
প্রথম প্রকাশ: প্রজন্ম ফোরাম

বুধবার, ২৭ মার্চ, ২০১৩

জীবনে বাঁশ

গ্রেডগুলো পকেটে, মানিব্যাগে থাকে,
যত ভাল লিখুক না, দিতে হাত কাঁপে।
বাঁশগুলো সবি ফ্রি, সরকারী মাল,
চূণটুকু খসলেই, তুলে ফেলে ছাল।

বাঁশগুলো আছেলা, বড় বড় গিট্টু,
ভেসলিন রাখ তাই, পকেটেই এক্টু।
এরপরো আছে ভাই, সময়েরই বাঁশ,
কত শত ভ্যাকেশন, জান হাঁসফাঁস।

কোনমতে পেরিয়ে, বাঁশবন পাড়া,
শুকতলি হবে ক্ষয়, চাচা-মামা ছাড়া।
সিনিয়রে তবু ছিল, পাত্রেরই দাম,
বেকারে কেবা করে, মান সম্মান।


===
প্রথম প্রকাশ: প্রজন্ম ফোরাম

না দেখলে মিস করবেন

ওটা হল ট্রেড মার্ক, লাইসেন্স বেকুবির,
বিনুদুনে এই ধারা, বাগদাদী কাহিনীর।

এসেছিলো লোকটা, খলিফার কাছেতে,
চাইবে যে অনুদান, মরে সে যে লাজেতে।
পথ মাঝে পেল সে, পানি সে কি অমৃত,
মশ্কটা নিল ভরে, খলিফাকে দেবে ট্রিট।

পথি মাঝে লাক ভাল, দেখা পেল খলিফার,
দূঃখের কথা বলে, দিল সেই উপহার।
খলিফা ঢালে সেটা, গলাতে এক ঢোক,
আসলেই দারুন এটা, রাখলাম এ তবারক।

যাও তুমি ফিরে বাড়ি, বাগদাদে কী হবে,
এই নাও মূদ্রা, দূঃখ কেটে যাবে।
সভাসদ সাথে যারা, হলো খুব হতবাক,
খলিফাটা করে কি! ক্লান্তিটা ঝেড়ে যাক।

গেলে পরে লোক সেই, সঙ্গিরা বলে তায়,
খুলে বল হে জনাব, কেন এই অভিপ্রায়!
খলিফা তব বলে, শুন মোর সভাসদ,
পানি যেটা দিয়েছে, স্বাদ তার অতি বদ।

হয়তো সে লোক থাকে, এমন এক এলাকায়,
পানির এই কোয়ালিটি, আরো নুন হবে তায়।
পাঠাতাম একে যদি, বাগদাদে নাও রেস্ট,
পথে গিয়ে দেখতো সে, পানি সেথা কত বেস্ট।

লজ্জায় মরে যেত, ভেবে এই উপহার,
ফিরালাম হেথা থেকে, এই হল সমাচার।
“না দেখলেই মিস’, যাদের এই কালচার,
বুঝে নাও থাকে কোথা, করবে কী? বল আর।


===
প্রথম প্রকাশ: প্রজন্ম ফোরাম

একটি তদন্ত রিপোর্ট

ব্যাকগ্রাউন্ড:
ফোরামেতে এসেছে মহা এক ধড়িবাজ,
পুরাতন পাপী সে, নয়া নিকে নাই লাজ।
পাত্তাটা খুব চায়, পিটিয়ে নিজ ঢোল,
তেল খেকো আদমী, শুধু শুধু করে গোল।

হলো কনফিউশন, ঠিকুজিটা লুকানো,
অনেকেই ভাবছে, পরিচয় কি যেন?
এর মাঝে কেউ কেউ, ভাবছে যে সে জানে,
লিখেছে যে ওল্ড নিকে, ঠিক একই প্যাটার্নে।

একে দুষে, তাকে তুষে, সন্দেহ তালিকায়,
ভুল ধরা খায় সব, বালক আর বালিকায়।
তাই ভাবি ফোরামে, সময়ের এ দাবী,
পরিচয় খোঁজা তার, ব্যাটা কোথা পালাবি?

কার্যপদ্ধতি:
গঠিত হল তাই, তদন্তের এক কমিটি,
চেয়ারেতে ছড়াবাজ, সব তারই ডিউটি।
সদস্য ঐ একজন, যেই ব্যাটা চেয়ারে,
শুরু হোক খোঁজাখুজি, স্টার্ট টপ গিয়ারে।

উপাত্ত সংগ্রহ:
শুরুতেই ক্যাক্ করে, ধরা হল ছড়িয়াল, 
ভাইরাস ছিল এক, ঘোর কলি দিনকাল।
একে একে উইকেট, পড়েছিলো কত যে,
এডু মডু বাদ নাই, গণহিস্টিরিয়া সে।

ভার্সন-দুই টাও হলো মিউটেশনে,
বেশ কিছু উইকেট, পড়েছে সে সেশনে।
ফোরামটা সার্চাই, নাম ছড়া-কবিতা,
লিস্ট করি পোস্টগুলো, নড়ে বসি গদিটায়।

উপাত্ত বিশ্লেষণ:
অতীতটা খুঁজলে, বিবেকেআগমন
ভাইরাস এনেছিলো, করেছিলো বিপনন।
মুনাপু, আলোকিত, ছিল বড় ভিক্টিম,
লিখে মাইক্রোকাতার, লিখেছিলো যে শামীম

শর্ট কাটে বলি যদি, বাদ যাবে মুনাপু,
কোরিয়াতে একাকি, সময় কোথা বাপু!
এছাড়াও অপরাধী, ছিল নাকি দুই ভাই,
কেস এটা ডিসমিস, নেক্সট স্যাম্পলে যাই … …

ফিমেলরা সব বাদ, সেই একই লজিকে
মিসটেক এটা হলে, ঘোল খাওয়া সবি যে!
এরপর নজরে, স্টার সব লেখোয়াড়,
বিছড়াই সকলের, লেখারো সমাহার।

উদাসীন ছুঁয়ে যায়, হৃদয়ের সরোবর,
অনুভূতি নিংড়ানো, চেতনা মহাসাগর।
বিরহ ও কষ্টের, মূর্ত সে কবিতা,
হতে পারে ছড়া তার, নব এক প্রতিভা।

মণ্ডল জামিলে, লেখে কড়া ছন্দে,
হতে পারে এটা সেও, মোটিভটা ধন্দে।
অনুকাব্যতে যে, লেখে ভাল মিন্টু,
পাতি ছড়াবাজ তাকে, নিজে বলে কিন্তু।

জেমস বন্ড ছাড়ে বেশ, কবিতার ছন্দ,
শুঁকে দেখি করে নাকি, ছড়াবাজ গন্ধ?
টমাটিনো, আর আছে, কোথা কেউ নেই যে,
রহস্য মানব ও থাকবে যে লিস্টে।

তার ছেড়া কাউয়ায়, ছড়া টড়া বোঝে না,
অফ দা রেকর্ডে, তারও আছে ঘটনা।
রোমান্স, রম্য, থ্রিলার আর সাসপেন্স,
সবি তার সেইম নিকে, এটাই কমনসেন্স।

অরুণ কে যদি বাদ, দিয়ে দেই ভ্রান্তে,
খুনসুটি করে সে, খুবই অক্লান্তে।
রাখতেই হবে তাকে, সন্দেহ তালিকায়,
ডিটিপির বাইরেও, গুন আরো আছে তায়।

উপসংহার:
সংক্ষেপে এই হল, সন্দেহ তালিকা,
মনে রেখ দিছি বাদ, যত আছে বালিকা।
আরো গেছে বাদ কত, শত শত ছড়াকার,
মডু-এডু জানে এর, ঠিকুজিটা কোথাকার।


===
প্রথম প্রকাশ: প্রজন্ম ফোরাম

মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ, ২০১৩

স্মৃতিচারণ – ০৪

ছড়াবাজ পড়েছিলো, লুঙ্গিটা সেই দিন,
নয়া নয়া বলে তাই, সামলাতে সঙ্গীন।
শয়তান সোহরাব, হ্যাঁচকা মারে টান,
ইজ্জত ফালুদা, ক্ষ্যাপে ছড়ু সেইরাম।

এক দৌড়, ঘরে এসে, হাফ প্যান্ট পড়লো,
পাকঘরে সাঁৎ করে, বটি হাতে বেরোলো।
কোপাবে যে আজ ওরে, সোহরাব বজ্জাত,
দিতে হবে বদমাশে, সেরকম যে জবাব।

দেখে খুনে ছড়াবাজে, অগ্নি মূর্তি,
দৌড়ায় জান হাতে, উড়ে যায় ফুর্তি।
মা সেটা দেখে ফেলে, বটি নিয়ে গেল কৈ?
দৌড়িয়ে বাইরে, হাঁক ডাক হৈ চৈ।

গার্ডটাই ছুটে আসে, ধরতে যে পিছু নেয়,
পারে না যে ধরতে, কিছুদুর দৌড়ায়।
সোহরাব বহুদুর, বাঁচা বাঁচা মোরে বাপ,
ছড়ুটাও ফিরলো, কমেছে তারও রাগ।


===
প্রথম প্রকাশ: প্রজন্ম ফোরাম

স্মৃতিচারণ – ০৩

থাকতাম বরিশাল, বাবা সেথা চাকুরে,
টেক্সটাইল মিল সেটা, শহরের বাইরে।
মিল কারখানাটার, এলাকা আলাদা,
আবাসিক সুন্দর, আজ হবে সে কথা।

ছোটবেলা একদিন, দুপুরের পরেতে,
ফুলবাবু দুইভাই, বের হল বেড়াতে।
বাসা দুই পেরুলেই, কিছু ইট সাজানো,
তার আঁড়ে ডোবা এক, কচুরিতে ভরানো।

সাথে ছিল সোহরাব, বন্ধু সে বড়টার,
আংগুল এগারোটা, দুই হাতে ছিল তার।
বেগুনি ফুল কিছু, কচুরির পানাতে,
নিতে মনে জাগে শখ, থামবে না মানাতে।

হাত বাড়িয়ে তোলে, ফুল বেশ কষ্টে,
হেলে পড়ে সামনে, পিছলানো ক্লিষ্টে।
ছোটটার বেশি লোভ, দাদা নেব ঐটা,
পারবোনা আনতে, দেখ্ কত দুরে তা।

এইবার ছোটটা, নিজেরই উদ্যোগ
ঢালু পাড়ে পিচ্ছিল, নেমে দেয় মনোযোগ।
হড়কালো পা যে তার, পিচ্ছিল পাড়ে ঐ,
সুড়ুৎ আঃ, ঝপ্পাস, দাদা ধর্, গেলি কৈ।

এক হাত ধরে বড়, এক হাত সোহরাব,
উপরের পানে টানে, হয় না তো কোন লাভ।
সোহরাব পেল ভয়, নির্ঘাৎ টানে ভুত,
দৌড়িয়ে পালালো, দাদাটার ধুকপুক।

ছাড়তে কি সে পারে, আদরের ছোট ভাই,
প্রাণপনে টানে যে, ছাড়বে না কিছুতেই।
পায়নিসে কখনই, হারানোর এ্যাত ভয়,
কাদাতে মাখামাখি, ভুতেরই পরাজয়।

মা দ্যাখে এল কে রে, দুইটা ছোট ভুত,
পাঠালাম টিপটপ, ঘটনা তো অদ্ভুদ!
কিল, চড়, থাপ্পর, পিঠে পড়ে ধুপ ধাপ্,
ধোলাইয়ে মন ভার, ছোটু তুই বেঁচে থাক।


===
প্রথম প্রকাশ: প্রজন্ম ফোরাম

রবিবার, ২৪ মার্চ, ২০১৩

স্মৃতিচারণ – ০২

দুপুরের নীলাকাশ, ঝরছে যে ঠা ঠা রোদ,
বাড়ি দুর এক ক্রোশ, শামসুটা গেলে ঢোক।
ইশকুল ফেরা পথ, আমগুলো টস্ টস্,
মাটি ফলে গড়াগড়ি, না খেলে সবই লস।

খিদে পেট চোঁচোঁ তাই, চিন্তাটা ছিলো বাদ,
ঢুকে যায় বাগানেতে, অমৃত! কি যে স্বাদ!
শান্তি কি উদরে, লেগে গিয়েছিলো চোখ,
বাঁধা পরে হাত-পা, পাহারায় ছিল লোক।

মালকিন ছুটে এল, চোর ধরা খবরে,
বুড়িটার ভারি তেজ, চোখ জ্বলে গরলে।
চাষার ঐ ব্যাটা তুই, কোথা পাস এ সাহস,
কচি মুখ, মায়া চোখ, সহসাই কমে রোষ!

বল্ ব্যাটা, কোথাকার? কী করে বাপ তোর?
: মিঞা পাড়া দুর গ্রাম, বাপে হেড মাস্টোর।
বুড়িটা কি থমকালো? কাঁপলো কি কন্ঠ?
বল্ তোর দাদা কে রে? ব্যাকুল, উৎকন্ঠ …

নুরুজ্জামান মিঞা, শুনে বুড়ি হতবাক,
কেঁদে ফেলে ঝর ঝর, দড়ি খোলে কাঁপা হাত।
কে আছিস? পানি আন, পাশে মোর বস তুই,
জানিস কি ও মানিক, আমি তোর কে যে হই?

কী নিবি, যত খুশি, নিয়ে যা ও বাড়িতে,
ইশকুল আসা পথে, খাবি এই হাড়িতে।
কত যুগ হয়ে গেল, দেখি না যে ঐ ঘর,
ঘোড়া চড়ে দুজনে, জোৎস্নায় পথ ভোর।   

সংসার দুজনার, হল সব বিরহ,
সন্তান নাই তাই, করে ফের বিবাহ।
এই ছিল তোর মনে, করবো না তোরে ভাগ,
চললাম আমি এই, স্মৃতিগুলো সাথে থাক। 

অতীতটা এই ছিল, শামসুর বোকা বাপ,
সৎ মাকে নিয়ে আসে, একটু তো ঘুরে যাক।
ঘুরে ঘুরে বাড়ি দেখে, ছেড়েছে যে অধিকার,
অভিমান যার তরে, সে লোকই পরপার।

কাঁদে কবরের পরে, গলাগলি বুড়ি দুই,
সন্তান, নাতি হল, বোকা নিজে গেলি কই?
শামসুটা পিতা মোর, শেকড়টা ও বাড়ি,
বুড়িগুলো ছিল তাই, দাদীমার শাশুড়ি।


===
প্রথম প্রকাশ: প্রজন্ম ফোরাম

শনিবার, ২৩ মার্চ, ২০১৩

হুমকিমাইসিন (ভেন্টিবায়োটিক-২)

এই এলাকায় আছে কিছু, ভুত জগতের চর,
কল্লাগুলো তিনকোনা আর, লম্বা তাদের ধর।
হেথার কথা ভুতের কানে, লাগানোই যে কাজ,
ধরতে তাদের এইখানেতে, ফাঁদ পেতেছি আজ।

পড়লে ধরা, ধরবো চেপে, কাঁথা চেপার কৌশলে,
হাড্ডি বদের! কানপড়া দাও? ভাগ ব্যাটা তোর সব ফেলে!
আবার যদি, দেখি তোদের, এ পাড়ার এই তল্লাটে,
ধরবো আবার, ছাড়বো নাতো, মারবো তোর ঐ কল্লাতে।

ভুত ব্যাটাকে, যা বলে দে, পারলে আসুক নিজ রূপে,
দেখাক তাদের কুশ্রী বদন, করবে বমি সব লোকে।
যা হবার ঐ প্রথম দিনেই, ভয় পাবে না এর পরে,
বন্ধু বেশে থাকলে তো বেশ, নাইলে ধোলাই পিঠজুড়ে।

===
প্রথম প্রকাশ: প্রজন্ম ফোরাম

শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০১৩

ভেন্টিবায়োটিক (ভুতের জন্য)

বয়েমেতে ভুত পুরে সিন্দুকে রাখো
দুষ্টামি, ভুতরামি আর হবে নাকো।
ভুত নাকি রাস্তায় গান গেয়ে ডাকে,
প্যান্ট ভিজে ভীতুটার, ঠক ঠক কাঁপে।

কানে গুজ হেডফোন গান ছাড় জোরে,
তারপর হাঁটা দাও পাকা রোড ধরে।
চিল্লিয়ে হয়রান, ভুত ফ্যা ফ্যা ঘোরে,
হেডফোনে ভলিউম, সাউন্ড ব্যারিয়ারে।

ভুত নাকি নেচে নেচে, আসে ভয় দেখাতে,
এর সমাধান যেটা, একটু তা ক্ষেপাটে।
দেখ দেখ বেশি করে হলে গিয়ে সিনেমা,
নাচ গান ভাড়ামি, থাকবেনা দামামা।

নায়িকার নাচাকুদা দেখ যদি দুচোখে,
ভুত কিগো পারবে ভড়কাতে এযুগে?
খাঁদা বোঁচা সখিদের নাচগুলো সব হট,
ভুত নাচে পারবে কি? চাকরিই হবে নট।

তারপরও যদি ভুত জোর করে নেচে যায়,
বলে দিও তুমি ঐ সিনেমার কেউ নয়।
চান্স যদি চায় নিতে সখি কিবা নায়িকার,
ওখানেতে গিয়ে যেন গড়ে নেয় ক্যারিয়ার।


===
প্রথম প্রকাশ: প্রজন্ম ফোরাম

বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০১৩

ছড়ার ছড়া

ছড়া ভরা কলা কত, লাফালো যে হনুমান,
ছড়াময় ধান ছিল, চিটা পেয়ে হল ম্লান।
ছড়ানো যে এলো চুল, ঢেউ তুলে মেঘদল,
ছড়াহার পরে খুশি, খুকিদের কোলাহল।

কেউ যদি পিছলিয়ে হাঁটু দিয়ে পড়ে যায়,
কাপড় আর চামড়াটা একটু কি ছড়ে যায়?
ছড়া দিয়ে পানি বয়, ছড়া সে তো ঝরণা,
মাগুরের ছড়া পুড়ে, বন জুড়ে কান্না।

ছড়্ ছড়্ ঢালো পানি, তুষ জ্বলা সে ছাইয়ে,
আম নাকি ছড়া-ছড়ি, কোথা গেলে? চাপাই-এ।
ছড়া ভাজে গুরুজন রিটন আর মৃদুলে,
লেখা সব যাদুময়, ছন্দটা না ভুলে।

আরও একজন আছে, কচি মনে করে হিট,
আহসান ফার্স্ট নেম, শেষে লেখা যে হাবীব।
ঠিক তাই, ছোট ভাই হুমায়ুন, জাফরের,
ছড়া ছিল উন্মাদে এলেবেলে সেকালের।

================
অভিধানে অভিযান, ছড়াগুলো ধরে আন
  • ছড়া1 [ chaḍ়ā1 ] ক্রি. ছড়ানো। [সং. ছটা]।
  • ছড়া2 [ chaḍ়ā2 ] ক্রি. ছড়ে যাওয়া, আঁচড় লাগা; ছাল উঠে যাওয়া। ☐ বি. বিণ. উক্ত অর্থে। [ছড়2 দ্র]।
  • ছড়া3 [ chaḍ়ā3 ] বি. 1 শিশু-ভোলানো বা মেয়েলি কবিতা; 2 গ্রাম্য কবিতাবিশেষ; 3 ছড়ি বা মালার আকারবিশিষ্ট বস্তু (গোটছড়া, হারছড়া); 4 গুচ্ছ, থোলো (কলার ছড়া); 5 ইতস্তত ছড়ানো তরল পদার্থ, ছিটা (জলছড়া, গোবরছড়া, ছড়া দেওয়া)। [সং. ছটা]। ছড়া কাটা ক্রি. বি. ছড়া আবৃত্তি করা; ছড়া তৈরি করে উত্তর-প্রত্যুত্তর করা। ছড়া-কার বি. ছড়া তৈরি করে এমন ব্যক্তি, ছড়া-রচয়িতা।
  • ছড়া-ছড়ি [ chaḍ়ā-chaḍ়i ] বি. 1 অযত্নে ইতস্তত নিক্ষেপ; 2 ওইভাবে অপচয় (জিনিসপত্রের ছড়াছড়ি); 3 চার দিকে ছড়িয়ে আছে এমন প্রাচুর্য (এ বছর এখানে আমের ছড়াছড়ি)। [ছড়া1 দ্র]।
  • ছড়ানো [ chaḍ়ānō ] ক্রি. 1 ইতস্তত নিক্ষেপ করা, বিক্ষিপ্ত করা (জিনিসপত্র এভাবে ছড়াল কে?); 2 বিস্তৃত হওয়া, বিস্তার লাভ করা, ব্যাপ্ত হওয়া (রোগ ছড়াচ্ছে, আগুন ছড়িয়ে পড়ছে); 3 ছিটানো (জল ছড়ানো, বীজ ছড়ানো)। ☐ বি. বিণ. উক্ত সব অর্থে। [ছড়া1 দ্র]।
প্রথম প্রকাশ: প্রজন্ম ফোরাম

ল্যাঙ্গোট টানে তাই, শরমেতে মরি ভাই …

যদিও সে পুরানা, ছড়াগুলো তো নতুন,
এনজয় এগুলোই, ভিন্নতা – সে তো গুন।
প্রাইভেসি গোপনীয়, লুঙ্গিটা টেনোনা,
ঢিলা গিট আমার এই, বেল্ট তুমি পড়না?

ছড়াবাজ নিকে সেকি, আছে কোনো প্রবলেম?
অভিযোগে চিপি দাও, এনি মোর কোশ্চেন?
সুতা ধরে দিলে টান, কার্টুনে দেখেছো,
জামা খুলে সুতা বেশে, নাঙ্গু সে ফেঁসেছো!

হাতে আছে ম্যালা সুতো, টানি যদি খুশিতে,
খসে যেতে পারে মাস্ক, মোক্ষম ঘুষিতে।
আপাতত ছাড়ি সব, ছড়াবাজি করে যাই,
গুতাগুতি হুটাপুটি, দিয়ে টাটা বাই বাই।


প্রথম প্রকাশ: প্রজন্ম ফোরাম

স্মৃতিচারণ-০১

কোন এক সকালে, আম তলে ধুপ ধাপ,
মেজোটাতো দেয় দৌড়, ছড়াবাজ চুপচাপ।
আম ফেলে কেরে ঐ, ভাবছে সে দাঁড়িয়ে,
দাদী কয়, গাধা নাকি?! আন ওটা কুড়িয়ে।

মগজেই আসে না, আম কে গো ফেললো?
শেষমেষ কাঁচুমাচু, দাদীকেই বললো।
দাদী ভাবে সেরেছে, এ ব্যাটার কী হবে
ফিউচার ফকফকা, আলবৎ গবেট-এ।

আসলে তো বোকা নয়, একটু কি ভাবালু
রাখ্ তোর এ লজিক, তু হামাক কী কলু?
মেজটাতো এনে আম, কাটাকাটি খাওয়া শেষ
ছড়াবাজ তখনও, ভেবে যায় সবিশেষ।

মেজগুলো হয় নাকি, সবচেয়ে চাল্লু
দাদা যে, গাধা সে – জানে সব উল্লু।
ছড়াবাজ এখনও ভাবাভাবি করে খুব,
ছড়া লিখে কীভাবে, এ যে বড় অদ্ভুদ।

দাদীটা আজ নাই, থাকলে তো দেখতো,
ছড়াবাজ হল শেষে, বিদ্যান ব্রত্য।
দাদী তুমি আছ শুয়ে, ছোট ঐ কবরে
Geneএর এই সাকসেস, রাখ নাকি খবরে?

মুখে তেল চুপচুপে, বাবা দিলো একি সাজ!
বলে তুই ছড়াবাজ, বিদ্যারই ও জাহাজ!!
টাইটেল পেয়ে সেই, ছড়াবাজ কি খুশি!
লাফ দেয় উঁচুতে, মুঠি হাত দু ঘুষি।

বাবাটাও আজ নেই, চুমে নিল বাই বাই,
চুম্বন বিদায়ের, গাধারাম বুঝি নাই।
পরদিন সব শেষ, ঝাঁপসা এ যাতনা,
ছাতা ছিলে এ মাথার, ছিলে মোর প্রেরণা।

প্রথম প্রকাশ: প্রজন্ম ফোরাম

বুধবার, ২০ মার্চ, ২০১৩

পরিচয় হই, স্বাগতম কৈ?

নরমাল সবকিছু, ভুড়িখানা মোটা
এজন্য রেগুলার চলে খুব খোঁটা।
লম্বায় পাঁচ ছয়, একটুও বেশি নয়
চার চোখ দেখে কেউ পেয়ো নাকো ভয়।

ফোরামটা গরম, তাই মারলাম উঁকি,
ছড়া বলি, এস দেখি, ছোট খোকা খুকি।
ছড়া দিয়ে বড়া ভেজে করি হৈ চৈ,
রংবাজ, ধাড়িবাজ, কাঠিবাজ নই।

এই হল পরিচয়, নেবে নাকি বরণে?
প্রায় প্রায় দিব ফাঁকি, শুধু বিনা কারণে।
ঠিঁকুজি? বাদ দেন ফোরামিক সাহেব,
ছড়াবাজি জারি থাক, ফুটি আল্ -গায়েব।

===

প্রকাশকাল: ২০-মার্চ-২০১৩
 
প্রথম প্রকাশ: প্রজন্ম ফোরাম
(প্রজন্ম ফোরামে ছড়াবাজের পরিচিতিমূলক পোস্ট ছিল এটা)